মঙ্গলবার, ০৫ Jul ২০২২, ০১:০৮ অপরাহ্ন
স্পোর্টস রিপোর্টার, ই-কণ্ঠটোয়েন্টিফোর ডটকম ॥ ফুটবলে বাংলাদেশের এখন আর ৮-১০ গোল কেউ দিতে পারে না । তখন ক্রীড়াঙ্গনে ছিল যেটা, ঢাকা স্টেডিয়ামে দর্শক আসার অভ্যাস ছিল, আজ সেই অভ্যাস নেই। তখন কোন টপ টিমের সঙ্গে খেলিনি। আপনি সেই সময়ে ফিরে যান, আমি দেখিয়ে দেব ৮০-৯০-এর দশকে কতগুলো ম্যাচে আমরা ৮-১০ গোল খেয়েছি, যেটা এখন আর হয় না।’
কথাগুলো বলেছেন কাজী মো. সালাউদ্দিন। ‘ফুটবলে সবাই শুধু অতীত অতীত করে, আমি তো জানি তখন আমরা কেমন ম্যাচ খেলেছি, কী রেজাল্ট হয়েছে। তখন এত মিডিয়া ছিল না।
বাংলাদেশের ফুটবলের পুনর্জাগরণসহ শক্তিশালী জাতীয় ফুটবল দল গঠনের লক্ষ্যে বছরব্যাপী ফুটবল লীগ, প্রতিযোগিতাসমূহ আয়োজন, প্রশিক্ষণ প্রদান ও একাডেমি পরিচালনাসহ বাফুফেকে শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে আগামী পাঁচ বছর মেয়াদী একটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) তৈরির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ লক্ষ্যে বাফুফেকে প্রস্তাবিত প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্নের জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালনায় বৃহস্পতিবার এনএসসি টাওয়ারে অর্ধ দিনব্যাপী আয়োজিত একটি কর্মশালায় উপরোক্ত মন্তব্য করেন সালাউদ্দিন।
এই কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অতিরিক্ত সচিব পরিমল সিংহ।
কর্মশালায় বাফুফে সভাপতি আরো বলেন, ‘আগে মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচে ৪০-৫০ হাজার দর্শক আসত। আজকে দর্শক আসে না বলে ফুটবলের ওই নেশাটা নেই। আজকে দর্শকরা টেলিভিশনে বসে টক শোতে থাকে। যারা টক শোতে থাকে তারা কিন্তু খেলা দেখে না। যারা খেলা দেখেছে ওইটার সঙ্গে তুলনা করলে বলবে, হ্যাঁ, আজকের খেলোয়াড়রা অনেক ভালো।’
দেশের ফুটবলে নেই সুখবর। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ব্যর্থতার বৃত্তে আটকা পড়ে গেছে বাংলাদেশ। শেষ ২০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাত্র ২টিতে জয়। বারবার দেশের ফুটবলের বেহাল দশা প্রকট রূপে ধরা দিচ্ছে। একের পর এক ব্যর্থতা র্যাঙ্কিংয়ের শেষের দিকে ঠেলে দিচ্ছে লাল-সবুজ বাহিনীকে। তারপরও বাফুফে সভাপতি স্বস্তি পাচ্ছেন। কারণ আগের মতো এখন আর বাংলাদেশ ৮-১০ গোল হজম করে না!
২০০৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পর বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল আর কোন ট্রফি জিততে পারেনি। গত বছর বিশ্বকাপ বাছাই, সাফ, শ্রীলঙ্কায় চার জাতি টুর্নামেন্টের পর চলতি মাসে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে হতাশা উপহার দিয়েছেন ফুটবলাররা। অথচ একসময় দেশের ফুটবলের উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। ঢাকার মাঠে ফুটবল মানেই ছিল সমর্থকদের উপচে পড়া ভিড়। যে মালয়েশিয়ার কাছে সদ্যই ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশ, সেই মালয়েশিয়াকেও নব্বইয়ের দশকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ!
বৃহস্পতিবার এ নিয়েই কর্মশালা হয়। সেখানে সাবেক ফুটবলার, ফুটবল সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন। পাঁচটি বিষয়ের ওপর পাঁচ গ্রুপ এতে অংশ নেন। গ্রুপে ছিলেন ফুটবলসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। গ্রুপ স্টাডির পর সেটি আবার পয়েন্ট আকারে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও বাফুফে সভাপতির সামনে তুলে ধরা হয়। কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন বাফুফের তিন নির্বাহী সদস্য সত্যজিৎ দাশ রুপু, বিজন বড়ুয়া ও নুরুল ইসলাম নুরু।