বুধবার, ০৭ Jun ২০২৩, ০১:২০ পূর্বাহ্ন
নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:: ঢাকার নবাবগঞ্জের কৃষি অধ্যুষিত ভাঙ্গাভিটা, কৈলাইল ও দৌলপুরসহ আশে পাশের বেশ কয়েকটি গ্রামে এ বছর বাঙ্গির বাম্পার ফলন হয়েছে। সবুজ ফসলের মাঠজুড়ে হলুদের আবহ। যেদিকেই চোখ যায় কেবল বাঙ্গি চাষের সমারোহ দেখা মেলে। তাই বাঙ্গি চাষিদের মুখে এবার হাসি দেখা গেছে। ভাঙ্গাভিটা গ্রামে এখন সকাল ও বিকাল বসছে বাঙ্গির হাট। ইছামতির তীর জুড়েই যেন নৌকা ভর্তি বাঙ্গি যাচ্ছে বিভিন্ন হাট বাজারে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এবছর বাঙ্গির উৎপাদন ও ভালো দামের কারণে চাষিরা এখন তৃপ্তির হাসি হাসছেন। উৎপাদিত ফসল নিয়ে আশায় বুক বাঁধছেন স্থানীয় কৃষকরা। অল্প পুঁজিতে ভালো মুনাফা হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকার মানুষ বাঙ্গি চাষ করে আসছেন বলে জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য শ্রী জীবন মন্ডল। তিনি বলেন, আমাদের এই অঞ্চলে প্রায় ১৫শত বিঘা জমিতে এবছর বাঙ্গি চাষ করার হয়েছে। এর মধ্যে ভাঙ্গাভিটা, দৌলতপুর, কৈলাইল ও পার্শ্ববর্তী খারশুল গ্রাম রয়েছে। তবে ভাঙ্গাভিটা গ্রামেই বেশী চাষ হয় বাঙ্গির।
ভাঙ্গাভিটা এলাকার বাঙ্গি চাষী শ্রী পরিমন্ডল বলেন, প্রায় পাকিস্থান আমলের শুরু থেকেই এ অঞ্চলে বাঙ্গি চাষ শুরু হয়েছে। বর্তমানে এ মৌসুমী ফলটির উৎপাদন ব্যাপক হারে বাড়ছে। প্রতি বিষা জমিতে বাঙ্গি উৎপাদনে প্রায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়। বিক্রি বাবদ ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আসে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে কৃষকদের খরচ কম হবে ও তারা বেশী লাভবান হতে পারবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাঙ্গি চাষি, হরে মন্ডল, রাম মন্ডল ও সুব্রতের সাথে কথা হলে জানান, আমাদের গ্রামে ৩ টি কালভার্ট আছে কিন্তু তার গোড়াতে মাটি নেই। এছাড়া কাজীর বাড়ি এবং তৈলক্ষ এর বাড়ীর মাঝামাঝি একটি সেতুর কাজ আংশিক হয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে পড়ে আছে। এগুলোর কাজ সমাপ্ত হলে সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে সেই সাথে ভাঙ্গাভিটা থেকে কৈলাইল, গোয়ালখালী হয়ে, সড়ক পথে জনসাধারণ,ছাত্র,শিক্ষক চাকুরীজীবি এবং কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্যসহ রাজধানী ঢাকাতে অল্প সময়ে যেতে পারবে। ফলে খরচ ও কমে আসবে অনেকটা।
ভাঙ্গাভিটা এলাকায় বাঙ্গির হাটের পাইকারি ক্রেতা রুবেল শেখ ও মান্নান জানান, প্রতি পিস বড় সাইজের বাঙ্গি ৫০ টাকায় কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করেছি। মজুরি ও গাড়ি ভাড়াসহ বিভিন্ন খরচ মিলিয়ে প্রতিটি বাঙ্গিতে সর্ব্বোচ ৫/১০ টাকা লাভ থাকলেই বিক্রি করে দিই।
নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাহিদুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে ২১৫ হেক্টর এর অধিক জমিতে বাঙ্গির চাষ হয়েছে। তিনি বলেন, এই ফলটিতে শর্করা, ভিটামিন ও মিনারেলস থাকায় বাজারে বাঙ্গির ভালো চাহিদা রয়েছে। এছাড়া কম সুগার থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয় এখন বাঙ্গি। বেশিরভাগই বাঙালির ইফতারেই বাঙ্গির চাহিদা থাকে। তাই বাজারে বাঙ্গির চাহিদা বেড়েছে। কেলাইল ইউনিয়নে উৎপাদিত এ বাঙ্গি দোহার নবাবগঞ্জসহ আশা পাশের এলাকাতে বেশি বিক্রি হয়।
এছাড়া নদী পথে এ অঞ্চলের বাঙ্গি ও সবজি শ্যাম বাজার, আমিন বাজার ও পুরান ঢাকার বিভিন্ন পাইকারী বাজারে বেচা বিক্রি হয়ে থাকে বলে এলাকাবাসী জানান।