মঙ্গলবার, ০৫ Jul ২০২২, ১২:৩৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক,ই-কণ্ঠ টোয়েন্টিফোর ডটকম॥ গণপরিবহনে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন রোধে রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ সিটির ১০০ গণপরিবহনে ১০০ সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। যেসব গণপরিবহনে সিসি ক্যামেরা বসানো হবে সেগুলো গাবতলী থেকে ছেড়ে আসবে।
সব ঠিক থাকলে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু হবে। সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর গণপরিবহনে নারীর নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন কর্মসূচির আওয়ায় এক বছরের জন্য এ পাইলট প্রকল্প নেয়া হয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিপ্ত ফাউন্ডেশন এতে সহায়তা করবে।
বুধবার বিকেলে ইস্কাটনের মহিলা ও শিশুবিষয়ক অধিদপ্তর মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তরা এসব তথ্য জানান।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, দেশে এই মুহূর্তে মোট জনগোষ্ঠির ৩৬ শতাংশ নারী কর্ম ক্ষেত্রে যাতায়াত করছে। তাদের মধ্যে ৮০ ভাগই গণপরিবহণ ব্যবহার করে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক জরিপ প্রতিবেদন বলছে, শতকরা ৯৪ ভাগ নারী যাত্রী কোনো না কোনোভাবে গণপরিবহনে হয়রনীর শিকার হেন। সিসি ক্যামেরা বসলে এ হয়রানী কিছুটা কমে আসবে।
তারা বলেন, গণপরিবহনে নারীদের বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানী একটা স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই হয়রানীর ব্যাপারে নারীদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলা হয়। এ ছাড়া পাবলিক বাসে মাত্র নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য মাত্র ৯টা আসন বরাদ্দ থাকায় বাধ্য হয়ে অপরিচিতদের সঙ্গে আসন ভাগাগাগি করে বসতে হয়।
সেমিনারে মহিলা ও শিশুবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন বলেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে মাল্টি সেক্টরাল প্রোগ্রাম চালু আছে। গনপরিবহনে নারীদের নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকার বেশ তৎপর। নারীদের নিরাপত্তায় প্রাথমিকভাবে দুই সিটিতে ১০০টি বাসে সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। আগামীতে এই পরিধি আরও বাড়ানো হবে।
দিপ্ত ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জাকিয়া কে হাসান বলেন, গণপরিবহনে নারীর নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন কর্মসূচির এই প্রকল্প দুই বছর ধরে চলছে। যা চলতি বছরের ৩০ জুন শেষ হচ্ছে। সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য দুই সিটির একাধিক বাসচালক ও হেলপারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কেউ সমস্যায় পড়লে বিশেষ অ্যাপসের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সেন্ট্রাল মনটিরিং ও কনট্রোল রুমে জানাতে পারবে। প্রতি তিন মাস অন্তর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে এ কর্মকাণ্ডের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
সেমিনারে ঢাকার ট্রাফিক পুলিশের ডিআইজি সৈয়দ নূরুল ইসলাম বলেন, বাসে সিসি ক্যামারা বসলে নারী যাত্রীদের হয়রনী কমবে। এমনকি চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইও কমবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ফেরদৌসী বেগম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব ও কর্মসূচি পরিচালক পাপিয়া ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব এনডিসি মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান, যুগ্ম সচিব ফেরদৌস বেগম এবং দিপ্ত ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জাকিয়া কে হাসান প্রমুখ।