মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০৪:১০ পূর্বাহ্ন
খুলনা ব্যুরো:: নারায়ণগঞ্জের মেধাবী তরুণ তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী ও সাংবাদিক সাগর-রুনির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
সোমবার বেলা ১১টায় নগরীর খালিশপুর গোল চত্বরে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন খুলনা মহানগর ও জেলা এবং খালিশপুর থানা শাখার যৌথভাবে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
এ সময় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সুজন খালিশপুর থানা কমিটির সভাপতি ডা. সৈয়দ মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু।
এতে বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জের মেধাবী তরুণ তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে অপহরণ করা হয়েছিল; যার লাশ ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীতে পাওয়া যায়। ৮ মার্চ রাতেই ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বি নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় আসামি অজ্ঞাত উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২৮ মে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র্যাব) কাছে ন্যস্ত করা হয়। ২৯ জুলাই দুইজন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। ঐ জবানবন্দিতে তারা কোথায়, কখন, কারা, কীভাবে এবং কেন ত্বকীকে হত্যা করেছে তার বিশদ বর্ণনা দেয়। ৭ আগস্ট একটি টর্চারসেলে অভিযান পরিচালনা করে রক্তমাখা প্যান্ট, রক্তমাখা গজারীকাঠের লাঠি, ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামাদি ও পিস্তলের অংশসহ কিছু আলামত সংগ্রহ করে র্যাব। ৫ মার্চ ২০১৪, র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল হাসান র্যাবের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সামনে র্যাব ত্বকী হত্যার রহস্য উদঘাটনের দাবি জানান। মোট ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছে বলে তারা জানান। এই সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবেদন ২০১৪ সালের ৫ মার্চ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হয়। পরদিন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগপত্র তৈরি করে সাংবাদিকদের সরবরাহ করা হয় এবং অচিরেই তা আদালতে পেশ করা হবে বলে জানানো হয়। এই পর্যায়ে এসে ত্বকী হত্যার বিচার প্রক্রিয়া থেমে যায়। কেননা আজ পর্যন্ত আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়নি। এই হত্যার পর থেকে অদ্যাবধি ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদী কর্মসূচিসহ হত্যার বিচারেরদাবিতে অনেক কর্মসূচি পালিত হয়ে আসলেও এক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি নেই। যেন এক বিচারহীনতার আবর্তে আটকে আছে এই মর্মান্তিক হত্যাকান্ড। শুধুমাত্র ত্বকী হত্যা-ই নয়, ২০১১ সালে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার একযুগ পেরিয়ে গেলেও তার অভিযোগপত্র আজও পেশ করা হয়নি। তদন্তকারী কর্মকর্তার পক্ষ থেকে ৯৪ বার সময় বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নেই কুমিল্লার তরুণী সোহাগী জাহান তনু হত্যারও। এমনিভাবে সারাদেশে গুম, অপহরণ ও হত্যার ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটে চলছে; যার বিচার হচ্ছে না। আর এভাবেই গড়ে উঠছে বিচারহীনতার সংস্কৃতি, যা একটি সভ্যসমাজে কাম্য নয়।
বক্তৃতা করেন, সুজন জেলা কমিটির সম্পাদক নাগরিক নেতা অ্যাডভোকে কুদরত-ই খুদা, সুজন বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাসুদুর রহমান রঞ্জু, নিজামুর রহমান লালু, রুবিনা আক্তার, তাহেরুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।