মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৩, ১২:২৬ অপরাহ্ন
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:: ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের ভরনিয়া বাজার সংলগ্ন রাস্তার ধারে ধানক্ষেতের মাঠে এক কোচিং সেন্টারের শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ভোরে সকালে হাঁটাহাঁটি করার সময় রাস্তার ধারে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে কিছু পথচারী মহিলা। পরে তারা স্থানীয়দের খবর দিলে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে রাণীশংকৈল থানার ওসি এস এম জাহিদ ইকবালসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহের প্রাথমিক সুরতহাল তৈরী করেন।
এছাড়াও ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সি আই ডি) বাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওই শিক্ষক ভরনিয়া চেংবাড়ী সম্পদ বাড়ী এলাকার নুরুল হোসেনের ছেলে হোসাইন আলী। তিনি পেশায় একজন কোচিং শিক্ষক ছিলেন।
পরিবারের দাবী পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে। নিহতের বোন রুমি, ছোট ভাই আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, তাদের গ্রামেরই অনুকুল ও ইশার সাথে তার ভাইয়ের কেস মামলা ছিল। ইশা ও অনুকুল আপন ভাই। অনুকুলের মেয়ের সাথে তার ভাই হোসাইনের প্রেম ভালোবাসা থেকে বিয়ে হয়েছিল। সেই বিয়ে মেনে নেয়নি অনুকুল। পরে কেস মামলা করে হোসাইনের কাছ থেকে তার মেয়েকে ছাড়িয়ে নিয়েছিল অনুকুল। কিন্তু হোসাইনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল।
নিহত হোসাইনের ভাই আব্দুর রাজ্জাক জানান, কিছুদিন আগে তাকে রাস্তায় আটকিয়ে অনুকুল হুমকি দিয়ে বলেছিল সপ্তাহখানেকের মধ্যেই হোসাইনকে দেখে নিবে সে। নিহতের বোন রুমি জানান, কোচিং সেন্টারে কিছুদিন আগে পড়ায় গাফিলাতির কারণে এক শিক্ষার্থীকে শাসন করেছিল হোসাইন। সে কারণে তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়েছিল ভরনিয়া এলাকার মুসা মাষ্টার।
নিহতের বোন দাবী করেন অনুকুল, ইশা ও মুশা মাষ্টার মিলে তার ভাইকে হত্যা করে মরদেহ ধান ক্ষেতে ফেলে রেখেছে। সে তাদের বিচার দাবী করেন।
নিহত হোসাইনের মা হোসনা খাতুন বলেন, কিছু দিন আগে এক শিক্ষার্থীকে পড়া গাফিলাতির কারণে শাসন করার অভিযোগে মুসা মাষ্টার মারের বদল মার দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। তিনি দাবী করেন অনুকুল, ইশার সাথে ছিল কেস মামলা তাই অনুকুল, ইশা ও মুসা মাষ্টার মিলে পরিকল্পিতভাবে তার ছেলেকে হত্যা করেছে।
অভিযুক্ত অনুকুল ও ইশার বক্তব্য নিতে তাদের সাথে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়ে তাদের বাড়ীতে গেলেও তাদের পাওয়া যায়নি। তবে আরেক অভিযুক্ত মুশা মাষ্টার বলেন, কোচিংয়ের শিক্ষার্থীকে মারধরের কারণে ওই শিক্ষার্থীর বাবা সফিকুল তার কাছে বিচার নিয়ে এসেছিল। তবে কোচিং এর বিষয়ের কারণে সেই বিচার তিনি করতে চাননি, তিনি চেয়ারম্যানকে দেখিয়ে দিয়েছিলেন। হুমকি প্রসঙ্গে বলেন, কাউকে তিনি হুমকি দেননি।
ধর্মগড় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, নিহত কোচিং শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে মারধরের একটি বিচার এসেছিল। তবে সেটি স্থানীয় বিএসসি শিক্ষক মোশাররফ বিষয়টির মিমাংসা করে দিয়েছিলেন। সেটি নিয়ে কোন অভিযোগ আর ছিল না।
ওসি এস এম জাহিদ ইকবাল বলেন, মরদেহের ডান হাতে ও বুকে ক্ষত পাওয়া গেছে। লাশের ময়না তদন্ত হলে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হবে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, নিহত শিক্ষকের পরিবার মৃতের জন্য দায়ী করে যাদের নাম বলছে তাদের বিষয়েও আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি।