বুধবার, ০৭ Jun ২০২৩, ০১:০৬ পূর্বাহ্ন
ই-কণ্ঠ অনলাইন রিপোর্ট:: বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ভোলার ‘ইলিশা-১ কূপকে দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নতুন গ্যাসক্ষেত্রে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত রয়েছে বলে আশা করছি। ইলিশা-১ এ মজুত গ্যাসের বাংলাদেশি টাকার বাজারমূল্য প্রায় ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।’
সোমবার (২২ মে) সকালে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এ গ্যাসক্ষেত্রের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানান তিনি।
নসরুল হামিদ বলেন, ‘যদি আমদানিকৃত এলএনজির দর বিবেচনা করি, তাহলে এই গ্যাসের মূল্য দাঁড়াবে ২৬ হাজার কোটি টাকা। এটা খুবই আনন্দের সংবাদ এবং সৌভাগ্যের। ভোলাতে সব মিলিয়ে প্রায় তিন টিসিএফ গ্যাস মজুত আশা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ভোলা থেকে প্রায় ২৬ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আমরা আশা করছি। আমাদের একটি প্রসেস প্লান্ট রয়েছে, আরও একটি আনার কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে পাইপলাইনে দেওয়া সম্ভব হবে। আমরা ভোলা থেকে বরিশাল হয়ে খুলনা যাবে একটি পাইপলাইন। প্রি-ফিজিবিলিটি টেস্ট শেষ, এখন ফিজিবিলিটি স্ট্যাডির কাজ চলছে।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দুটি অনুসন্ধান কূপ (টবগী-১ ও ইলিশা- ১) এবং ১টি মূল্যায়ন উন্নয়ন কূপ (ভোলা নর্থ-২) খনন শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে তিনটি কূপ (টবগী ১, ভোলা নর্থ-২ এবং ইলিশা-১) খননের পরিকল্পনা করা হয়। রাশিয়ার তেল গ্যাস উত্তোলনকারী সরকারী প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের মাধ্যমে বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে ওই প্রকল্পের অধীনে টবগী-১, ভোলা নর্থ-২ এবং ইলিশা-১ কূপ খনন করা হয়। এতে প্রতিটি কূপ হতে দৈনিক পড়ে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস প্রাপ্তি পরীক্ষিত হয়।
এই প্রকল্পের অধীনে গত ৯ মার্চ ইলিশা ১ অনুসন্ধান কূপের খনন কাজ শুরু করে গত ১৪ এপ্রিল কূপের ৩ হাজার ৪৭৫ মিটার গভীরতায় খনন কাজ শেষে পৃথক নতুন একটি বাণিজ্যিকভাবে সফল গ্যাসের স্তর আবিষ্কৃত হয়। সার্বিক ভূতাত্ত্বিক ও ভূপদার্থিক কারিগরি বিশ্লেষণ ও ডিএসটি (ড্রিল স্টেম টেস্ট) করে ইলিশা কূপ স্থাপনাকে দেশের নতুন ২৯তম গ্যাস ক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা প্রদানের বিষয়ে বাপেক্স এর ভূতাত্ত্বিক বিভাগ মতামত প্রদান করে।
এছাড়া কূপের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডিএসটি কার্যক্রমের মাধ্যমে অপর স্তর দুইটি হতেও গড়ে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস ফ্লো টেস্টে করা হয়েছে, যা আশাব্যাঞ্জক ও দেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় নব দিগন্তের সূচনা করেছে।
প্রসঙ্গত, ভোলাতে আগে থেকে দুটি গ্যাসক্ষেত্র ছিল। ইলিশাসহ এখন তিনটি গ্যাসক্ষেত্র হলো। এই ৩টি গ্যাসক্ষেত্রের ৯টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। এগুলো হলো, বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহাবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রের ছয়টি কূপ, সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ভোলা নর্থের দুটি ও সর্বশেষ ইলিশা ক্ষেত্রের ইলিশা-১ কূপ।