মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ১২:২০ পূর্বাহ্ন

ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মেয়েরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ উদযাপনের সব রকমের প্রস্তুতি নিয়েই রেখেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ হ্যান্ডবল দল। গ্যালারিতে ছিল দর্শকের উন্মাদনা। মোসাম্মৎ মারফি, রুনা লায়লাদের গলায় ছিল সোনালি পদক। হাতে চ্যাম্পিয়নের ট্রফি। কনফেত্তির রঙিন কাগজের বৃষ্টিতে যখন বাংলাদেশের মেয়েরা ভিজছিল, পাশ থেকে ভেসে আসছিল ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ চিৎকার।

বঙ্গবন্ধু আইএইচএফ চ্যালেঞ্জ ট্রফি ওমেন্স টুর্নামেন্টের ইয়ুথ বিভাগে বড় চমক দেখিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। বুধবার ঢাকার পল্টনের শহীদ (ক্যাপ্টেন) এম মনসুর আলী জাতীয় হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে ফাইনালে ভারতকে হারায় ৪৬-৪৩ গোলে।

সাউথ-সেন্ট্রাল এশিয়া জোন-২ এ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে বাংলাদেশ ইয়ুথ দল খেলবে এই টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় রাউন্ডে। জাতীয় ও বয়সভিত্তিক কোন পর্যায়েই কখনোই এর আগে ভারতকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। অবশ্য ইয়ুথ দলের মতো পারফরম্যান্স করতে পারেনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ জুনিয়র দল। এই বিভাগের ফাইনালে ভারতের কাছে ৪৮-১৭ গোলে হেরে যায় বাংলাদেশ।

ইয়ুথ দলের ফাইনালটা হয়েছে ফাইনালে মতোই। প্রথমার্ধে ২০-২০ গোলে সমতায় ছিল দুই দল। বেশিরভাগ সময় পেন্ডুলামের মতো দুলেছে ম্যাচের ভাগ্য। দু’দলের তীব্র লড়াইয়ে একবার ভারত এগিয়ে যায় তো গোল করে আবারো সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। এক ঘণ্টার এই ম্যাচে প্রথমার্ধে ২০ মিনিটের সময় ১৬-১০ গোলে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন অধিনায়ক মারফি, রুনা লায়লারা।

খেলার ৪৪তম মিনিটে লাল কার্ডের শাস্তিতে মাঠ ছাড়েন ভারতের প্রাধান্য বালাসো মানে। ওই সময় ৬ জনের দলে পরিণত হয় ভারত। বাংলাদেশের খেলোয়াড় ছিল ৭ জন। ওই সময়ও ম্যাচে পরিস্কার ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ভারত ৩৩-২৮গোলে।
৫০তম মিনিটে গিয়ে ভারতকে একেবারে চেপে ধরেন বাংলাদেশের মেয়েরা। এ সময় গোলের পর গোল করে ব্যবধান কমিয়ে আনে স্বাগতিকরা। ৫৫তম মিনিটে গিয়ে টানা তিন হলুদ কার্ড দেখে কোর্ট ছাড়েন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গোলদাতা অধিনায়ক মারফি (১৫ গোল)। তখনো ম্যাচে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ম্যাচে সর্বোচ্চ ১৫ গোল করেন অধিনায়ক মারফি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিজয়ীর বেশেই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ দলের কোচ ডালিয়া আক্তার ম্যাচ শেষে বলেন, ‘টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বলেছিলাম চমক দেখাবে আমার দল। সেটাই করে দেখিয়েছে তারা। মেয়েদের এমন পারফরম্যান্সে আমি অনেক খুশি। আমার খেলোয়াড়ি জীবনে কখনো ভারতকে হারাতে পারিনি। কিন্তু প্রথমবার কোচ হয়ে সেই অর্জনে নাম লেখাতে পেরেছি। ভারতকে যে কোনো খেলায় হারানো কঠিন। হ্যান্ডবলে তো আরও কঠিন। সেই কঠিন কাজ আমার মেয়েরা করে দেখিয়েছে।’

পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলেছেন বাংলাদেশ ইয়ুথ টিমের অধিনায়ক মারফি। হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। দলকে ফাইনালে তুলে আনা থেকে চ্যাম্পিয়ন করার পেছনে তার অনেক বড় ভূমিকা। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক বলেন, ‘আমি অনেক খুশি। কোচ, খেলোয়াড়, কর্মকর্তা সবাইকে ধন্যবাদ। সবাই আমাদের অনেক সমর্থন করেছেন। আজ অনেক দর্শক মাঠে এসে আমাদের সমর্থন দিয়েছেন।’

খেলা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশনের সভাপতি নুরুল ফজল বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান কোহিনুর, আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2020  E-Kantha24
Technical Helped by Titans It Solution