বৃহস্পতিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০২:৪২ অপরাহ্ন
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি:: চলতি মৌসুমে তিন বিঘা জমি বর্গা নিয়ে পাট চাষ করেছেন, উপজেলার কালীদাশখালী চরের আশরাফুল ইসলাম। অনাবৃষ্টি আর প্রচন্ড খরতাপে জমির বেশিরভাগ পাটগাছ পুড়ে মরে যাচ্ছে তার। আবাদি জমির পাট মরে নষ্ট হলেও পানির অভাবে পাট কেটে জাগ দিতে পারছেন না। বৃষ্টি না হওয়ায় আশরাফুল ইসলামের পাট ক্ষেতের মতো খরতাপে পুড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ক্ষেতের ভুট্টাও।
চরাঞ্চলের কালীদাশখালী গ্রামের বাসিন্দা কামরুল ইসলাম জানান, ২০ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছ। আবাদ করা জমির অধিকাংশ ভুট্টা রোদে পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। আব্দুস সামাদ নামের এক কৃষক বলেন, আবাদে এবার খরচ উঠবে না। খরায় সর্বনাশ হয়ে গেছে। এভাবে আর দুই সপ্তাহ চললে ক্ষেতের ফসল কাটা যাবেনা। কৃষি অফিস বলছে, চরের জমিগুলো বেলে মাটি। যার ফলে মাটি গরম হয়ে ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার চরে রোদে পুড়ে নষ্ট হচ্ছে শত শত বিঘা জমিতে আবাদ করা পাট ও ভুট্টা। ভালো দামের আশায় পাট ও ভুট্টার আবাদ বাড়লেও পানির অভাবে মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চার হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে পদ্মার চরেই আবাদ হয়েছে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর। উপজেলায় ১১৭ হেক্টর ভুট্টার আবাদের মধ্যে পদ্মার চরে আবাদ হয়েছে ৫০ হেক্টর। চাষিরা জানান, বছরে তিনবার ভুট্টার আবাদ করা হয়। বিঘাপ্রতি উৎপাদন হয় ২৫-৩০ মণ। এক বিঘা জমিতে পাট উৎপাদন হয় ১০-১২ মণ। পাট চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয় ৮-১০ হাজার টাকা। ভূট্টা চাষে বিঘাপ্রতি খরচ হয় প্রায় ৮ হাজার টাকা। একবার সেচ দিলে বিঘাপ্রতি খরচ হয় এক হাজার টাকা। ভাড়া করা গর্তে পাট জাগ দিলে লোকসান গুনতে হবে তাদের।
বুধবার (২০ জুলাই) সরেজমিন পদ্মার চরে গিয়ে দেখা যায়, শতশত বিঘা জমিতে আবাদ করা পাট ও ভুট্টা রোদে পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও কোন পানি নেই যেখানে চাষিরা পাট জাগ দিয়ে ফসল রক্ষা করবেন। যার ফলে খরায় পুড়ে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে আবাদি ফসল।
উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বৃষ্টি না হওয়ার ফলে আবাদ করা পাট ও ভুট্টা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বেলে মাটির কারণে প্রচন্ড খরতাপে মাটি গরম হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে চর এলাকার পাট ও ভুট্টা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখন পাট জাগ দেওয়ার জন্য বৃষ্টির প্রয়োজন। কিন্তু পাট জাগ দেওয়ার পানির সংকটে পড়েছেন কৃষকরা। অতিরিক্ত খরচ করে সেচের পানিতে পাট জাগ দিবেন সেটাও হচ্ছেনা।