বৃহস্পতিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৩:০৩ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বর্হি বিভাগে রোগীদের টিকিট মূল্য ৩ টাকা। সরকারের গ্রেজেট অনুযায়ী প্রজ্ঞাপনে দীর্ঘদিন ধরে এই নিয়মেই চলে আসছে। রোগীরা ডাক্তার দেখাতে আসলে ৩ টাকা দিয়েই টিকিট ক্রয় করে থাকেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ৩ টাকার পর আর কোন নতুন প্রজ্ঞাপন হয়নি।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গত দুসপ্তাহ ধরে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ টাকা মূল্যের টিকিট নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা। প্রতিবেদকের কাছে রোগীরা এমন অভিযোগ করলে বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশ করলেই টিকিট কাউন্টারে রোগীদের কাছ থেকে ৩ টাকার টিকিট ১০ টাকা নিতে দেখা যায়। টাকা দিতে গিয়ে কাউন্টারে থাকা কর্মরত ব্যক্তিকে নানা ধরনের প্রশ্ন করেন রোগীরা। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকজন রোগী প্রতিবাদ করলেও কোন ধরনের সুফল পাননি। নবাবগঞ্জবাসী বলছেন, সবকিছুর দাম বাড়ায় বেচে থাকাটাই কষ্ট হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে আবার সরকারি হাসপাতালের টিকিট মূল্য দশ টাকা করা হয়েছে।
হঠাৎ তিন টাকার টিকিট ১০ টাকা মূল্য করায় নবাবগঞ্জে সাধারণ মানুষের মাঝে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। মন্তব্য করছেন অনেকেই অনেকভাবে। হাসাপাতালে আসা রোগীসহ সাধারণ লোকজন বিষয়টি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, পূর্বের মত বর্হি বিভাগের রোগীদের টিকিট মূল্য ৩ টাকা করা হোক। এসময় তারা স্বাস্থ্য বিভাগ ও পরিচালনা কমিটির নিকট জোরদাবি জানান।
জাকির নামের এক রোগী প্রতিবেদককে বলেন, বিগত দিনে সব সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে ৩ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ডাক্তার দেখাতাম। হঠাৎ এখন টিকিট কাটতে গেছি , দেখি ১০ টাকা চাচ্ছে। কাউন্টারে জিজ্ঞেস করলাম দশ টাকা কেন দিব, আগে তো তিন টাকা দিতাম। ‘কাউন্টারে থাকা ব্যক্তি বললেন, হাসপাতালের স্যাররা দশ টাকা নিতে বলেছে, কিছু বলার থাকলে স্যারদের কাছে বলতে পারেন।
রোগী নিয়ে হাসপাতালে আসা আরিফুল ও এক রিক্স চালক বলেন, যারা সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন বেশিরভাগ রোগীর আর্থিক অবস্থা খারাপ বলেই এখানে সেবা নিতে আসে। টিকিট মূল্য যদি দশ টাকা হয় তাহলে অনেকটাই জুলুম হয়ে যায়। ভাংতি টাকা না দিতে পারায় ৫ টাকা দিয়েছি বলে আমাকে টিকিট দেয়নি। ১০ টাকা নেওয়ার বিষয়ে সরকারি ভাবে বাড়ানো হয়েছে কি না, নাকি হাসপাতাল থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের দৃষ্টিআকর্শন করেন তিনি।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারি ভাবে টিকিট মূল্য ৩ টাকা, ‘বিগত দিনে এই হাসপাতালে তিন টাকাই নেওয়া হয়েছে। উপজেলা পরিষদের মিটিং’এ রেগুলেশন করে ১০ টাকা করা হয়েছে। এতে, ৩ টাকা রাজস্ব খাতে যাবে এবং বাকী ৭ টাকা হাসপাতাল উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। ‘‘রোগীদের অভিযোগ ও ক্ষোভের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোগীরা আমাদের কাছেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং দশ টাকা নেওয়ার বিষয়ে অনেকেই এসে নানা ভাবে প্রশ্ন করেছেন। তিনি আরো বলেন, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে আবারও পরামর্শ করে জনগণের স্বার্থে পূর্বের টিকিট মূল্য তিন টাকা করার জন্য সুপারিশ করবো।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান বলেন, সরকারিভাবে বর্হি বিভাগে টিকিট মূল্য ৩ টাকা। টিকিট মূল্য ১০ টাকা করে একটি রেগুলেশন কপি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আমাদের কাছে পাঠিয়েছে।