মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
খুলনা ব্যুরো:: খুলনায় চাঁদা আনতে গিয়ে আটক হয়েছে চাঞ্চল্যকর মশিয়ালীর ট্রিপল মার্ডার মামলার অন্যতম আসামি শেখ জাফরিন হাসান।
রোববার (১৬ এপ্রিল) রাত ১১ টার দিকে ঐ কারখানার শ্রমিক ও এলাকাবাসী তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। আটক জাফরিন নগরীর খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী গ্রামের অধ্যাপক হাসান শেখের ছেলে।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ জানায়, কয়েকদিন আগে ঈদের বকশিশ হিসেবে পথেরবাজারে সাউথ এশিয়ান প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের কারখানায় গিয়ে জাফরিন ম্যানেজার গোলাম সরওয়ারের নিকট মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। রোববার রাতে সে আবারো ম্যানেজারের কাছে গিয়ে চাঁদা দাবি করে। এরপর কারখানার শ্রমিক ও এলাকাবাসী তাকে আটক করে পুলিশে দেয়। এ সময় তার অন্যান্য সহযোগী পালিয়ে যায়।
সাউথ এশিয়ান প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং কারখানার ম্যানেজার গোলাম সরওয়ার জানান, রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাফরিনসহ কয়েকজন জোর করে কারখানায় প্রবেশ করে। এ সময় তারা কারখানার প্রধান ফটকে নিরাপত্তাকর্মীকে হুমকি-ধামকি দেয়। এরপর আমার অফিস কক্ষের সামনে এসে তারা গালিগালাজ ও চেঁচামেচি করতে থাকে। বিষয়টি টের পেয়ে আমি অন্য কক্ষে অবস্থান নেই। তারা পরে আমার বাসায় যায় এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। এর আগে গত কয়েকদিন ধরে জাফরিন মোবাইল ফোনে কল করে চাঁদা দাবি করে। রোববার (১৬ এপ্রিল) বিকালে একটি মোবাইল নাম্বার থেকে আমার নাম্বারে ম্যাসেজ পাঠানো হয়। তাতে লেখা ছিল ‘আপনি খেলা শুরু করেছেন আমি শেষ করব ইনশাল্লাহ রেডি থাকেন’।
এ ব্যাপারে খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন খান বলেন, এ ঘটনায় রোববার রাতেই জাফরিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৬ জুলাই বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মুজিবর নামে মশিয়ালী গ্রামের এক নিরীহ ব্যক্তিকে অস্ত্রসহ খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সহপ্রচার সম্পাদক জাকারিয়া হাসান এবং তার ভাই জাফরিন ও মিল্টন পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় গ্রামের বেশ কয়েকজন জাকারিয়ার বাড়িতে গিয়ে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে যায়। এ সময় জাকারিয়ার সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জাকারিয়া, জাফরিন ও মিল্টন তাদের ওপর অতর্কিতে গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে মশিয়ালী গ্রামের মো. নজরুল ইসলাম, গোলাম রসুল ও সাইফুল ইসলাম নামে তিনজন নিহত হয়। অপরদিকে, বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে সন্ত্রাসী জাকারিয়া বাহিনীর সদস্য ও জাকারিয়ার চাচাতো ভাই জিহাদ শেখ মারা যায়। এ ঘটনার পর খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগ থেকে জাকারিয়াকে বহিস্কার করা হয়।
মশিয়ালী হত্যাকান্ডের দু’দিন পর ঐ বছরের ১৮ জুলাই রাতে গুলিতে নিহত সাইফুল ইসলামের পিতা সাইদুল শেখ বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় বহিস্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ জাকারিয়া হাসান, তার ভাই বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা শেখ জাফরিন হাসান ও মিল্টন এবং সহযোগী জাহাঙ্গীর ও আরমানসহ ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১৫/১৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরে যশোরের বাঘারপাড়া থানা এলাকা থেকে পুলিশ পলাতক জাফরিনকে গ্রেফতার করে। উক্ত মামলায় জাফরিন জামিনে ছিলেন।