শুক্রবার, ০২ Jun ২০২৩, ০৩:০১ অপরাহ্ন
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:: ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার অন্যতম প্রাচীন ও সর্ব বৃহৎ রামরায় দিঘী (রাণীসাগর) অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত। পাখি দেখতে দর্শনার্থীদের ভীড়। পুরো দিঘির জলাশয় সেজেছে নতুন সাজে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাখি ও জলাশয়ের প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। প্রতিবছর শীত এলেই এসব পাখি এখানে এসে প্রকৃতিকে সাজায় নতুন সাজে।
প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির সমাগম হয়েছে এখানে। পাখিদের কলকাকলিতে পুরো এলাকা মুখরিত। পাখি প্রেমি ও সৌন্দর্য পিপাসুরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত পর্যটন কেন্দ্র’র পাখিগুলোকে দেখার জন্য ছুটে আসেন। রাণীসাগরে এখনো প্রতিদিন ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে অতিথি পাখির দল। পাখিদের মুহুর্মুহু কলতানে পুরো এলাকা পরিণত হয়েছে পাখির স্বর্গরাজ্যে। সন্ধ্যা নামলেই দিঘীপাড়ের লিচু বাগানে আশ্রয় নেয় এসব পাখি। পাখিদের এই মুহুর্মুহু কলতানের টানে প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে রামরাই দিঘিতে ছুটে আসছেন পাখিপ্রেমী পর্যটকরা।
এ দেশের নদ-নদী, হাওর-বাওড়ের ভালোবাসার টানে লক্ষ হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে রামরায় দিঘীতে আসে তারা। উপজেলা শহর থেকে ৪ কিমি দূরে উত্তরগাঁও গ্রামের নিকটেই বরেন্দ্র অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাশয় রামরায় দিঘীর অবস্থান। শহর থেকে যে কোন যানবাহনে ১০ থেকে ১৫ টাকা ভাড়া নেয়। যেতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিটের রাস্তা। সরেজমিনে কথা হয় সৈয়দপুরের সেলিনা বেগমের সাথে। তিনি জানান, শুনেছিলাম রাণীসাগরে অনেক পাখি আসে। তাই দেখতে এসেছিলাম। এখানে এসে মনটা ভরে গেল। পুকুরের চারিদিকের শত শত লিচু গাছ দেখতে বেশ মনোরম। পুকুরের নীচ থেকে পাড়ের দিকে তাকালে মনে হয় আকাশের সাথে মিশে আছে।
স্থানীয়রা জানান, আমাদের এখানে যে পাখি আসছে তার নাম ছোটসরালি। শীতের শুরু থেকে বহু মানুষ আসছেন এসব পাখি দেখার জন্য। অনেক সময় পাখি শিকারিরাও আসেন পাখি শিকারের উদ্দেশ্যে। আমরা সবসময় তাদের নিরুৎসাহিত করি কারণ অতিথি পাখিরা আমাদের দেশে আসে অতিথি হয়ে। পুকুরের পশ্চিম পাড়ে হোসেনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়। কথা হয় চেয়ারম্যান মাহবুব আলমের সাথে। তিনি বলেন, প্রতি বছর দূর দূরান্তের লোকজন এখানে পাখিগুলো দেখতে আসে। কাউকে পাখি শিকার করতে দেওয়া হয়না। রামরায় দিঘীকে পুরোপুরিভাবে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ জানান, রামরায় দিঘী রাণীশংকৈলের অহংকার, রাণীশংকৈলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে রেখেছো। ছোট সরালি জাতের অতিথি পাখি এই রামরায় দিঘীতে প্রতি শীতকালেই আসে। অতিথি পাখিদের আবাসস্থলে কোন সমস্যা যেন না হয় সেই জন্য মেশিনের নৌকা চালানো নিষেধ করা হয়েছে। আশা করছি বড় ধরণের বাজেট পেলে এটি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলবো। বর্তমানে এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে পর্যটকদের বসার ও রান্না করার জন্য ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।